পুরুষদের মধ্যেও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি, এর লক্ষণ কী?

ছবি সংগৃহীত

 

হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমে যাওয়ার সমস্যাকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়

হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমে যাওয়ার সমস্যাকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এক্ষেত্রে হাড়গুলো ভঙ্গুর হয়ে যায়। ফলে ফ্র্যাকচারের প্রবণতা বাড়ে।

হরমোনের পরিবর্তনের কারণে সাধারণত পোস্টমেনোপজাল নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন, তবে পুরুষদের মধ্যে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বেশি। বেশিরভাগ পুরুষই অস্টিওপরোসিস সম্পর্কে অবগত না থাকায় গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার সম্মুখীন হন।

 

পুরুষদের অস্টিওপোরোসিসের কারণগুল কী কী?
জীবনযাত্রার অভ্যাস

ভুল জীবনধারায় এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন- ধূমপান, অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন, অপর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ ইত্যাদি। এছাড়া শারীরিক কার্যকলাপের অভাবও উল্লেখযোগ্যভাবে হাড়কে প্রভাবিত করতে পারে।

কম টেস্টোস্টেরন

হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে টেস্টোস্টেরন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। ফলে দুর্বল হাড় অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

রোগের কারণে

কিছু দীর্ঘমেয়াদী রোগে যেমন- ডায়াবেটিস, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাড়ের ঘনত্বকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই অবস্থায় যেসব ওষুধের প্রয়োজন হয়, সেগুলো নিয়মিত সেবনে হাড় আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।

ওষুধের ব্যবহার

নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের দীর্ঘায়িত ব্যবহার, যেমন- গ্লুকোকোর্টিকয়েডস (হাঁপানি বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত) হাড়ের ক্ষয় ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

বয়স বাড়লে

বয়স বাড়লে হাড়ের ঘনত্ব স্বাভাবিকভাবেই কমতে শুরু করে। ফলে বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

 

পরিবারে কারও অস্টিওপরোসিস থাকলে আপনারও এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ কী কী?
অস্টিওপোরোসিসকে একটি ‘নীরব’ রোগ বলা হয়, কারণ এটি সাধারণত ফ্র্যাকচার না হওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট লক্ষণ ছাড়াই বাড়তে শুরু করে। যেসব লক্ষণ দেখা দেয়-

>> পিঠে ব্যথা
>> প্রায়শই ফ্র্যাকচার বা ভেঙ্গে যাওয়া কশেরুকার কারণে
>> সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা কমে যাওয়া
>> নড়াচড়ায় অসুবিধা
>> হঠাৎ ফ্র্যাকচার ইত্যাদি।

পুরুষদের অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা ?কী
১. জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে

ডায়েট

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্য বা পরিপূরকের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করুন। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুগ্ধজাত দ্রব্য, শাকসবজি) ও ভিটামিন ডি (চর্বিযুক্ত মাছ, দুর্গযুক্ত খাবার) অন্তর্ভুক্ত করুন।

ব্যায়াম

হাড় ও পেশী মজবুত করার জন্য নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। ওজন বহন ও পেশী-শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে ও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন ও অ্যালকোহল সীমিত করুন

ধূমপান ক্যালসিয়াম শোষণকে ব্যাহত করতে পারে ও হাড়ের ক্ষয় বাড়াতে পারে। মাঝারি মাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণও সীমিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

২. ওষুধ

বেশ কিছু ওষুধ হাড়ের ক্ষয় কমিয়ে বা হাড় গঠনকে উদ্দীপিত করে অস্টিওপরোসিস পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

এর মধ্যে থাকতে পারে- বিসফসফোনেটস, টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (যদি কম টেস্টোস্টেরন একটি ফ্যাক্টর হয়), ইস্ট্রোজেন অ্যাগোনিস্ট/প্রতিপক্ষ, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ক্যালসিটোনিন পিটিএইচ ও হাড়-সংরক্ষণকারী ওষুধ।

৩. নিয়মিত স্ক্রীনিং

Jagonews24 Google News Channelজাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।
যেসব পুরুষের মধ্যে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি, তাদের উচিত হাড়ের ঘনত্বের স্ক্রিনিং করানো ও চিকিৎসকের সপরামর্শ নেওয়া। প্রাথমিক শনাক্তকরণের পর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্ষতি কমানো সম্ভব।
এক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি ও তার তত্ত্বাবধায়নে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।  সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ

» বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে বিএনপির শুভেচ্ছা

» আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগের বিষয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা

» জুলাই আন্দোলন দমাতে ব্যবহৃত হয় শুটিং ফেডারেশনের অস্ত্র: ক্রীড়া উপদেষ্টা

» ৭১ এর রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে : উপদেষ্টা শারমীন

» একজন মুসল্লির মতো এলেন জীর্ণশীর্ণ দেখতে, এমন শাসক আর শাসনই আমাদের স্বপ্নময় ছিল! : প্রেস সচিব

» হুয়াওয়ে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশ’-এর নিবন্ধন শুরু

» লোকসাহিত্য গবেষক ও কবি অ আ আবীর আকাশ এর জন্মদিনে বিভিন্ন মহলের উষ্ণ অভ্যর্থনা

» প্রাইম ব্যাংকের অগ্রযাত্রার ৩০ বছর: টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসাথে পথ চলার অঙ্গীকার

» বাগেরহাটের বলভদ্রপুর বাস-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুরুষদের মধ্যেও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি, এর লক্ষণ কী?

ছবি সংগৃহীত

 

হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমে যাওয়ার সমস্যাকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়

হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমে যাওয়ার সমস্যাকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এক্ষেত্রে হাড়গুলো ভঙ্গুর হয়ে যায়। ফলে ফ্র্যাকচারের প্রবণতা বাড়ে।

হরমোনের পরিবর্তনের কারণে সাধারণত পোস্টমেনোপজাল নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন, তবে পুরুষদের মধ্যে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বেশি। বেশিরভাগ পুরুষই অস্টিওপরোসিস সম্পর্কে অবগত না থাকায় গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার সম্মুখীন হন।

 

পুরুষদের অস্টিওপোরোসিসের কারণগুল কী কী?
জীবনযাত্রার অভ্যাস

ভুল জীবনধারায় এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন- ধূমপান, অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন, অপর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ ইত্যাদি। এছাড়া শারীরিক কার্যকলাপের অভাবও উল্লেখযোগ্যভাবে হাড়কে প্রভাবিত করতে পারে।

কম টেস্টোস্টেরন

হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে টেস্টোস্টেরন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। ফলে দুর্বল হাড় অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

রোগের কারণে

কিছু দীর্ঘমেয়াদী রোগে যেমন- ডায়াবেটিস, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাড়ের ঘনত্বকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই অবস্থায় যেসব ওষুধের প্রয়োজন হয়, সেগুলো নিয়মিত সেবনে হাড় আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।

ওষুধের ব্যবহার

নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের দীর্ঘায়িত ব্যবহার, যেমন- গ্লুকোকোর্টিকয়েডস (হাঁপানি বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত) হাড়ের ক্ষয় ও ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

বয়স বাড়লে

বয়স বাড়লে হাড়ের ঘনত্ব স্বাভাবিকভাবেই কমতে শুরু করে। ফলে বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

 

পরিবারে কারও অস্টিওপরোসিস থাকলে আপনারও এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ কী কী?
অস্টিওপোরোসিসকে একটি ‘নীরব’ রোগ বলা হয়, কারণ এটি সাধারণত ফ্র্যাকচার না হওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট লক্ষণ ছাড়াই বাড়তে শুরু করে। যেসব লক্ষণ দেখা দেয়-

>> পিঠে ব্যথা
>> প্রায়শই ফ্র্যাকচার বা ভেঙ্গে যাওয়া কশেরুকার কারণে
>> সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা কমে যাওয়া
>> নড়াচড়ায় অসুবিধা
>> হঠাৎ ফ্র্যাকচার ইত্যাদি।

পুরুষদের অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা ?কী
১. জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে

ডায়েট

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্য বা পরিপূরকের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করুন। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুগ্ধজাত দ্রব্য, শাকসবজি) ও ভিটামিন ডি (চর্বিযুক্ত মাছ, দুর্গযুক্ত খাবার) অন্তর্ভুক্ত করুন।

ব্যায়াম

হাড় ও পেশী মজবুত করার জন্য নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। ওজন বহন ও পেশী-শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে ও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন ও অ্যালকোহল সীমিত করুন

ধূমপান ক্যালসিয়াম শোষণকে ব্যাহত করতে পারে ও হাড়ের ক্ষয় বাড়াতে পারে। মাঝারি মাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণও সীমিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

২. ওষুধ

বেশ কিছু ওষুধ হাড়ের ক্ষয় কমিয়ে বা হাড় গঠনকে উদ্দীপিত করে অস্টিওপরোসিস পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

এর মধ্যে থাকতে পারে- বিসফসফোনেটস, টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (যদি কম টেস্টোস্টেরন একটি ফ্যাক্টর হয়), ইস্ট্রোজেন অ্যাগোনিস্ট/প্রতিপক্ষ, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ক্যালসিটোনিন পিটিএইচ ও হাড়-সংরক্ষণকারী ওষুধ।

৩. নিয়মিত স্ক্রীনিং

Jagonews24 Google News Channelজাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।
যেসব পুরুষের মধ্যে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি, তাদের উচিত হাড়ের ঘনত্বের স্ক্রিনিং করানো ও চিকিৎসকের সপরামর্শ নেওয়া। প্রাথমিক শনাক্তকরণের পর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্ষতি কমানো সম্ভব।
এক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি ও তার তত্ত্বাবধায়নে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।  সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com